গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বিল ও বন্ড ২০২৩ । যে কারণে আপনি ট্রেজারি বিল বা বন্ডে বিনিয়োগ করবেন

সরকারি ট্রেজারি বিল সরকার নিজে বিক্রি করে তাই সম্পূর্ণ নিরাপদ-যদিও বর্তমান ৬.৫% সুদ/মুনাফা পাওয়া যায় – এটি প্রতিনিয়ত আপ-ডাউন হয় – গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বিল ও বন্ড ২০২৩

গভঃ ট্রেজারি বিল ও বন্ড কী? সরকার বিভিন্ন সময় জনগণ বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়ে থাকে। দেশের উন্নয়ন, জরুরি প্রয়োজন বা বেতন-ভাতা দিতে সরকার এসব ঋণ নিয়ে থাকে। ট্রেজারি বিল বা বন্ডের মাধ্যমে এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ নিবাসী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ-এর তহবিল লাভজনক উপায়ে বিনিয়োগের জন্য ৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিন মেয়াদী ট্রেজারী বিল এবং ৫, ১০, ১৫ এবং ২০ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ গভর্ণমেন্ট ট্রেজারী বন্ড (BGTB) নিলামের মাধ্যমে ইস্যু করছে। বাংলাদেশ নিবাসী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান যেমন-ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানী, কর্পোরেট বডি, প্রভিডেন্ট ফান্ড পেনশন ফান্ড ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অনিবাসী বাংলাদেশী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান যাদের বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে Non – Resident Foreign Currency Account আছে  তারও ক্রয় করতে পারেন।

বাংলাদেশ নিবাসী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ মেয়াদপূর্তির পূর্বে যে কোন সময় এ বিল/বন্ড বিক্রয় করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট শাখায়/প্রাইমারী ডিলারের নিকট অথবা বাংলাদেশ নিবাসী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান যেমন- ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানী, কর্পোরেট বডি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন ফান্ড ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট এ বিল ও বন্ড বিক্রয় করা যাবে। অনিবাসী বাংলাদেশী ব্যাক্তি এবং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কোন ব্যাংকে Non-Resident Foreign Currency Account আছে এমন অনিবাসী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট মেয়াদপূর্তির পূর্বে যে কোন সময় এ বিল/বন্ড বিক্রয় করতে পারবে। তবে ক্রয়ের ১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ নিবাসীর নিকট বিক্রয় করতে পারবে না।

সরকারের হাতে থাকে বলে সঞ্চয়পত্র ও ট্রেজারি বিল ও বন্ড সম্পূর্ণ নিরাপদ / ফিক্সড ডিপোজিট থেকেও এটি বেশি নিরাপদ ও লাভজনক

চলতি বছরই ট্রেজারি বিল ও বন্ড শেয়ার বাজারে উঠবে। এতে করে সাধারণ জনগণ শেয়ার মার্কেট থেকেই এটি ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারবেন।

গভর্নমেন্ট ট্রেজারি বিল ও বন্ড ২০২৩ । যে কারণে আপনি ট্রেজারি বিল বা বন্ডে বিনিয়োগ করবেন

Caption: Source of Information

বাংলাদেশ গভর্ণমেন্ট ট্রেজারী বিল ও বন্ড । ট্রেজারি বিল বা বন্ড ক্রয় বিক্রয় নিয়ম বা বিধিমালা

  1. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড-এর কোন শাখায় পাওয়া যাবে? সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সকল কর্পোরেট শাখায়। যে সকল জেলায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের কর্পোরেট শাখা নেই সে সকল জেলার সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান শাখায়।
  2. বিল ও বন্ডের সুবিধা কি? বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে আকর্ষণীয় (মেয়াদ ভেদে বিলের ক্ষেত্রে ২.৩১% – ৪.৬১% এবং বন্ডের ক্ষেত্রে ৭.৮০% – ৯.১০%) মুনাফা প্রদান করা হবে। প্রত্যেক নিলামে এই মুনাফা পরিবর্তনশীল। এ বিল ও বন্ড গ্যারান্টিযুক্ত বিধায় এ খাতে বিনিয়োগ সম্পূর্ন ঝুকিঁমুক্ত। বিলের মেয়াদকাল ৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিন এবং বন্ডের মেয়াদকাল ৫, ১০, ১৫ এবং ২০ বছর বিধায় বিনিয়োগকারী সুবিধাজনক মেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারবেন। ক্রেতা সরাসরি সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠেয় নিলামে (প্রাইমারী মার্কেটে) অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  3. বিলে বিনিয়োগ স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় মেয়াদান্তে মুনাফা ও আসল একসাথে ফেরৎ পাওয়া যাবে।
  4. বন্ডের মুনাফা ইস্যুর তারিখ হতে ছয় মাস অন্তর অন্তর উত্তোলনযোগ্য।
  5. অর্জিত মুনাফা এবং পুনঃবিক্রয়কৃত অর্থ/মেয়াদ পূর্তির পর আসল বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশে প্রত্যাবাসনযোগ্য।
  6. বিল ও বন্ডের মূল্যমান কত? ১.০০ লক্ষ্ টাকা এবং ১.০০ লক্ষ টাকার গুনিতক অঙ্কে ক্রয় করা যাবে।
  7. বিল/বন্ড ক্রয়ের পদ্ধতি কি? (ক) প্রাইমারী ইস্যু: বন্ড ক্রয়ের জন্য ক্রেতাকে মনোনীত শাখায় চলতি হিসাব খুলতে হবে। উক্ত চলতি হিসাবে ক্রেতার আবেদন অনুযায়ী পর্যাপ্ত স্থিতি থাকতে হবে যা লিয়েন মার্ক করা থাকবে।
  8. কূপন হার উল্লেখ করে ১.০০ টাকার গুনিতক অঙ্কের অভিহিত মূল্যে মনোনীত শাখার মাধ্যমে নির্ধারিত ফরমে ত্রেতাকে আবেদন করতে হবে। ক্রেতার প্রস্তাবিত কূপন হার বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট গ্রহনযোগ্য হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেতার অনুকূলে বিল/বন্ড ইস্যু করবে।
  9. বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ক্রেতার অনুকূলে বিল/বন্ড ইস্যু করার পর বিল/বন্ডের টাকা সংশ্লিষ্ট শাখা ডেবিট টিআরএ-এর মাধ্যমে প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারী ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে প্রেরণ করবে।
  10. সেকেন্ডারী ইস্যু- কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান সেকেন্ডারী মার্কেট থেকেও বিল/বন্ড ক্রয় করতে পারবে। এক্ষেত্রে মনোনীত শাখাকে বিল/বন্ডের মূল্যের সমপরিমান অঙ্কের চেক/ডেবিট টিআরএ প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারী ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে প্রেরণ করতে হবে।
  11. মনোনী শাখাকে সংশ্লিষ্ট ক্রেতার অনুকূলে একটি সাবসিডিয়ারী জেনারেল লেজার(SGL) খুলতে হবে এবং ঐ লেজারে এন্ট্রি দিতে হবে।
  12. বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্তির পর ষান্মাসিক কুপন/মুনাফা সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেবিট টিআরএ-এর মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে।
  13. অর্থ আইন ২০০৭ এ বর্ণিত বিধি অনুযায়ী বিল/বন্ডের জন্য প্রদেয় মুনাফা/সুদের উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আয়কর কর্তনযোগ্য হবে।
  14. ক্রয়/বিক্রয় চুক্তির কপি বিল/বন্ডের সার্টিফিকেট হিসেবে পরিগণিত হবে।
  15. বিল ও বিন্ড নগদায়ন/বিক্রয় পদ্ধতি- মেয়াদপূর্তিতে বিল/বন্ডের আসল এবং সুদ যথাসময়ে প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারী ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন থেকে সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রেরণ করা হবে।

ট্রেজারি বন্ড কত দিনের জন্য ক্রয় করা যায়?

ট্রেজারি বন্ড হল একটি দীর্ঘমেয়াদী(২-২০ বছর মেয়াদি) ক্যাপিটাল মার্কেট প্রোডাক্ট। সরকার এটি ইস্যু করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলামের মাধ্যমে কেনা-বেচা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এর নিলামে অংশ নিতে পারে। তবে উল্লেখ্য যে, কোন প্রতিষ্ঠানের শাখা পর্যায়ে ট্রেজারি বন্ড ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেনা। শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারি বিভাগ থেকে এটি ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। বর্তমানে আমাদের দেশে ৫(পাঁচ) ধরণের ট্রেজারি বন্ড প্রচলিত আছে। এগুলো হলঃ ১) ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড । ২) ৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড । ৩) ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড। ৪) ১৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড । ৫) ২০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড।

বর্তমান অর্থনীতিতে তারল্যের আধিক্যের কারণে ট্রেজারি বন্ডের হার খুবই কম। এই হার ৫% থেকে ৯% এর মধ্যে উঠানামা করে।। ট্রেজারি বিল হল একটি মানি মার্কেট প্রোডাক্ট আর ট্রেজারি বন্ড হল একটি ক্যাপিটাল মার্কেট প্রোডাক্ট। এদের মধ্যে মূল পার্থক্য হল ট্রেজারি বিল স্বল্পমেয়াদী এবং ট্রেজারি বন্ড দীর্ঘমেয়াদী।

ট্রেজারি বিল কত দিনের জন্য ক্রয় করা যায়?

২৮ দিন, ৯১, ১৮২ দিন, ৩৬৪ দিন, ২ বৎসর এবং ৫ বৎসর মেয়াদি ট্রেজারি বিল হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি ট্রেজারি বিলের প্রধান সংরক্ষণকারী বিলগুলো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট তাদের চাহিদা অনুযায়ী নিলামে বিক্রি করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *