সুদ ও ডলারের বিনিময় হার বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়– বাজারে যদি সুদের হার নির্ধারিত করে দেয়া হয় তবে ব্যাংক এবং জনগণ তাদের বানিজ্যে স্বাধীনতা হারাবে। সুদের হারের সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির একটা বিপরীতমুখী সম্পর্ক আছে—এটি সবার জানা। সম্পর্কটা এ রকম, যদি সুদের হার বাড়ে তাহলে মুদ্রাস্ফীতি কমে। কারণ, বর্ধিত হারে সুদের কারণে ঋণ গ্রহণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে বলে মুদ্রাবাজারে অর্থের সরবরাহ কমে যায়। অর্থ সরবরাহ কমে গেলে বাজারে পণ্যের চাহিদাও কমে যায়, ফলে তার দামও কমে আসে। এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে, এই স্বতঃসিদ্ধ নিয়মটি কেবল চাহিদাজাত মুদ্রাস্ফীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদস্ফীতিতে এই তত্ত্ব অকার্যকর।

ডলারের হার বেধে দেয়ার কারণে ডলার মুক্ত বাজারে লেনদেন বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ডলার হার যেখানে ৯৫ টাকা থেমে রয়েছে। খোলা বাজারে এখনও ডলারের রেট ১১৪ থেকে ১১৬ টাকায় ঘুরঘর করছে। ইতোপূর্বে ডলারের দাম ১২০ টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছিল ফলে ব্যাংকগুলো ডলারে মুনাফা করেছে অনেক বেশি। এজন্য অবশ্যই কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করা হয়েছে। ডলার কারসাজি: ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ

Loan interest rate 2024 countries in the world / Deposit interest rate country in the world

যে দেশ যত বেশি উন্নত সে দেশে আমানতের উপর সুদের হার তত কম হয়। যদি অস্ট্রেলিয়া বা আলবেনিয়ার দিকে তাকাই তবে দেখবো আমানতের উপর সুদের হার ১% এর নিচে। আবার যদি আর্জেটিনার দিকে দেখি তাহলে দেখবো ধার বা ঋণের উপর সুদের হার আমানতের থেকে কম।

Deposit interest rate VS Lend or Loan Interest rate in the world countries

Caption: Argentia deposite rate of interest 48% whereas Loan rate 35.56% 

যে সকল কারণে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে । মুদ্রাস্ফিতির কারণেই মূল্যস্ফিতি ঘটে থাকে।

  • বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো অর্থের যোগান বৃদ্ধি।
  • বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কারণ হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
  • জনসংখ্যার কারণে সরকার অনেক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে । এজন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় হলেও সে অনুপাতে উৎপাদন বাড়ে না । ফলে মুদ্রাস্ফীতি হয়।
  • বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির আরও একটি কারণ হলো ব্যাংক ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি।
  • উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিও মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি , শিল্পের কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি , শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি এবং সুষ্ঠু পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে উৎপাদন ব্যয় যথেষ্ট বেড়েছে।
  • আমদানি নিয়ন্ত্রণও মুদ্রাস্ফীতির হয়। দেশীয় শিল্প রক্ষা এবং বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতার কারণে বিশেষ বিশেষ পণ্য আমদানির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক ও কর ধার্য করা হয়েছে।
  • বাংলাদেশে আয়কর প্রদান করে এমন ব্যক্তির সংখ্যা অনেক কম।
  • বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ হলো অনুন্নয়ন ও অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় বৃদ্ধি।
  • সাম্প্রতিক সময়ে এদেশে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে । এজন্য অভ্যন্তরীণ বাজারে দ্রব্যের যোগান হ্রাস পেয়ে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে।
  • টাকার অবমূল্যায়ন হলেও মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। কেননা টাকার অবমূল্যায়ন হলে আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রীর দাম বেড়ে যায় ।

মুদ্রাস্ফিতিই কি মূল্যস্ফিতি ঘটায়?

মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি – মুদ্রাস্ফীতি বলতে অর্থনীতিতে মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধিকেই বোঝানো হয়। অর্থনীতিতে মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে গেলে এবং পণ্য ও সেবার সরবরাহ অপরিবর্তিত থাকলে মূল্যস্ফীতি ঘটে। কারণ অনেক বেশি টাকা সীমিত পণ্য ও সেবার পেছনে ধাওয়া করে। এতে চাহিদা ও মূল্যস্তর—দুটিই বেড়ে যায়।