ব্যাংক নোট পরিচ্ছন্ন নীতিমালা ২০২৩ । ইদুরে কাটা, ছেঁড়া এবং পোড়া টাকা পরিবর্তন করা যাবে কি?

পরিচ্ছন্ন নোট (Clean Note) নীতিমালায় ছেড়া ফাঁটা, পোড়া, ঝলসানো ইত্যাদি নোট পরিবর্তন বা ধ্বংস করা হবে-নতুন নোট ছাপানো হবে – ব্যাংক নোট পরিচ্ছন্ন নীতিমালা ২০২৩

নতুন নোট মুদ্রন করা হচ্ছে কি? – বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর 7A (e) এবং 23 (1) ধারা মোতাবেক নোট ইস্যু করার একক দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। অধিক্ষেত্রাধীন দায়িত্ব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট নোট মুদ্রণ, সংরক্ষণ, পরিবহণ, প্রচলন, যাচাই-বাছাই, বাতিলকরণ, বাতিলকৃত নোট ধ্বংসকরণ ইত্যাদি কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে বন্ধপরিকর।

বানিজ্যিক ব্যাংক কি ছেড়া ফাঁটা নোট নিবে? বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ধারা ২৩ (১) মোতাবেক বাজারে পরিচ্ছন্ন নোটের প্রচলন / যোগান স্বাভাবিক রাখার নিমিত্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক প্রতি বছর নির্ধারিত সংখ্যক নোট মুদ্রণ ও সরবরাহের লক্ষ্যে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিঃ (এসপিসিবিএল)কে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়ে থাকে। কার্যাদেশের বিপরীতে মুদ্রিত নতুন নোট ইস্যু অফিসের চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখায় সরবরাহ করা হয় এবং প্রচলনে দেওয়া হয়। অপরদিকে, বাজারের ছেড়া ফাটা এবং অপ্রচলনযোগ্য নোট বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করা হয়। জমাকৃত নোট পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক যথাযথ প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করা হয়। তাছাড়া, তফসিলি ব্যাংক হতে গৃহীত পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোটসমূহ ম্যানুয়াল/অটোমেটেড পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাইপূর্বক পুনরায় বাজারে প্রচলনে দেওয়া হয়। এইভাবে নোটের জীবনচক্র (Life Cycle) চলমান থাকে।

আগুনে ঝলসানো নোটও পরিবর্তন করা যাবে? হ্যাঁ। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ২৮ ধারা মোতাবেক বাজারে পরিচ্ছন্ন নোট / Clean Note প্রচলন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম একটি দায়িত্ব। উক্ত ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, The Bank shall not reissue Bank Notes which are tom, defaced or excessively soiled. এই উদ্দেশ্য অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে বিভিন্ন নীতি/পদ্ধতি প্রণয়ন করে থাকে। উক্ত নীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী প্রচলনে থাকা বিদ্যমান পুরাতন, ধ্বংসযোগ্য এবং অযোগ্য নোট যথাযথ প্রক্রিয়ায় ধ্বংস করা হয় এবং নতুন নোট এর মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়। এতদ্‌সত্ত্বেও বাজারে অপ্রচলনযোগ্য ও ত্রুটিপূর্ণ নোট হিসেবে অধিক ময়লাযুক্ত, ছেঁড়া-ফাটা, আগুনে ঝলসানো, ড্যাম্প, মরিচাযুক্ত, অধিক কালিযুক্ত, অধিক লেখা-লেখি, স্বাক্ষরযুক্ত ও বিভিন্ন খন্ডে খন্ডিত নোট এর আধিক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই প্রচলনে থাকা ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা, গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি এবং নোটের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে উক্ত নোটসমূহ বাজার হতে দ্রুত প্রত্যাহার করে ধ্বংসকরণপূর্বক নতুন নোট প্রতিস্থাপন করার নিমিত্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচ্ছন্ন নোট নীতিমালা (Clean Note Policy of Bangladesh Bank) প্রণয়ন করা হয়েছে।

When we asked Alamin was it difficult to be the Best Looking Man in Bangladesh – he replied – “My intention was never to be the most handsome man in Bangladesh, you see, the others are just too ugly that I had to do pretty-much nothing to achieve this glory”

পোড়া টাকা পরিবর্তন । পুরাতন টাকা দিয়ে নতুন টাকা

বাজারে পরিচ্ছন্ন নোট সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমন্টে কর্তৃক বাজারে প্রচলিত নোটসমূহের ধরনের ভিত্তিতে ৪ (চার) ভাবে ( ১. পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট, ২. অপ্রচলনযোগ্য নোট, ৩. ত্রুটিপূর্ণ নোট এবং ৪. দাবীযোগ্য নোট) সংজ্ঞায়িত করে ডিসিএম সার্কুলার নং-০৩, তারিখঃ ২১/০৫/২০১৯ জারি করা হয়। উক্ত সার্কুলারকে ভিত্তি বিবেচনায় শুধুমাত্র পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোটসমূহ Clean Note হিসেবে গণ্য হবে যা বাজারে পুনরায় প্রচলনে দেওয়া বা প্রচলনের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য নোট যেমন অপ্রচলনযোগ্য, ত্রুটিপূর্ণ ও দাবীযোগ্য নোটসমূহের বিনিময়ে পরিচ্ছন্ন নোট / পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট সরবরাহ
করা হবে।

Caption: Money Cleaning Rules 2023

বাংলাদেশী মুদ্রা কাঠামো – সকল মূল্যমানের নোটই কাগজে মুদ্রার । ৫ টাকা, ২ টাকা, ১ টাকা, ৫০ পয়সা এবং ২৫ পয়সা মূল্যমানের মুদ্রাসমূহ মিশ্রিত ধাতুর তৈরী।

  1. ১০০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ২০০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০ টাকা, ২০ টাকা ও ১০ টাকা মূল্যমানের ৭ ধরনের ব্যাংক নোট এবং
  2. ৫ টাকা, ২ টাকা ও ১ টাকা মূল্যমানের ৩ ধরনের ধাতব মুদ্রা ও কারেন্সী নোট এবং
  3. ৫০ ও ২৫ পয়সা মূল্যমানের ২ ধরনের শুধুমাত্র মুদ্রার সমন্বয়ে বাংলাদেশের মুদ্রা কাঠামো গঠিত।

বিদেশী নোটও কি দেশে উৎপাদন করা হয়?

১৯৮৮ সাল হতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সাবসিডিয়ারী হিসেবে গঠিত দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ লিমিটেড (এসপিসিবিএল) এর মাধ্যমে সকল কাগুজে নোট মুদ্রণ করা হয়। ধাতব মুদ্রা আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মুদ্রণ করা হয়ে থাকে। এসপিসিবিএল নোটের ডিজাইন, স্পেসিফিকেশন, সিকিউরিটি মার্ক, কাগজ, কালি ইত্যাদি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড নিশ্চিত করে থাকে।

নতুন মুদ্রা ছাপিয়ে পুরাতন মুদ্রা ধ্বাংস করার উদ্দেশ্য কি? বাজারে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচ্ছন্ন নোট (clean note) প্রচলন নিশ্চিত করার নিমিত্তে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সৃষ্ট বা ব্যবহারের কারণে ময়লাযুক্ত, ছেঁড়া-ফাটা, আগুনে ঝলসানো, ড্যাম্প, মরিচাযুক্ত, অধিক কালিযুক্ত, অধিক লেখা- লেখি, স্বাক্ষরযুক্ত, বিভিন্ন খন্ডে খন্ডিত নোট প্রত্যাহার করা। প্রত্যাহারকৃত নোট এর বিপরীতে পরিচ্ছন্ন নোট (clean note) এর মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা। বাজারে প্রচলিত নোটসমূহের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ; (৪) বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট সরবরাহ নিশ্চিত করা।

  • ডিসিএম সার্কুলার নং-০৩, তারিখঃ ২১/০৫/২০১৯ এবং ডিসিএম সার্কুলার নং-০৪, তারিখ: ২৮/০৯/২০২১ এ নীতিমালার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা। উক্ত সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়ায় নোট সর্টিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন করা হবে।
  • Bangladesh Bank (Note Refund ) Regulations 2012 বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য অপ্রচলনযোগ্য, ত্রুটিপূর্ণ ও দাবীযোগ্য নোট বিনিময় সহজ করা।
  • জনসাধারণের হাতে থাকা সাধারণ ব্যবহার্য্য অপ্রচলনযোগ্য/ত্রুটিপূর্ণ নোট সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে ডিসিএম কর্তৃক সময় সময়ে Ranndom Survey পরিচালনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক মাত্রা নির্ধারণ করা।
  • নোট প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিসে আধুনিক নোট সর্টিং মেশিন স্থাপন করা।
  • নোটের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং এই উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সম্পৃক্ত করা।
  • ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় নোট ব্যবহারে অধিক যত্নবান হওয়ার বিষয়ে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে উৎসাহিত করা।
  • পরিচ্ছন্ন নোট বাজারে প্রচলনের স্বার্থে তথা জনসাধারণ, প্রতিষ্ঠান এবং আন্তঃব্যাংক লেনদেনে পরিচ্ছন্ন নোট ব্যবহার নিশ্চিত করার স্বার্থে যথাযথভাবে নোট সর্টিং, প্যাকেটিং, ব্যান্ডিং, নোট প্যাকেটে ফ্লাইলীফ লাগানো ও স্ট্যাপলিং সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাসমূহ যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা। ৮) প্রকৃত চাহিদা নিরূপন (Need assessment) করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) – লিঃ এর নোট মুদ্রণ সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা।
  • নোট উৎপাদনে দীর্ঘস্থায়ী, আধুনিক ও উন্নতমানের, কাগজ, কালি ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করার নিমিত্ত ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক উদ্যোগ গ্রহণ করা।
  • তফসিলি ব্যাংকসমূহের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিভাগ/জেলা/উপজেলায় নোটের ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেবা পক্ষ পরিচালনা করা।
  • নোট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে তফসিলি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ/কর্মশালা / মতবিনিময় সভার আয়োজন করা।
  • পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে প্রচলনযোগ্য, অপ্রচলনযোগ্য ও ত্রুটিপূর্ণ নোটসমূহের সর্টিং, সংরক্ষণ, বিনিময় তথা নোট ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করা।
  • নোট ধ্বংসকরণ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবকাঠামোগত (Infrastructure) উন্নয়ন তথা প্রতিটি অফিসে পরিবেশবান্ধব উন্নতমানের ইনফ্রারেড বৈদ্যুতিক চুল্লী/আধুনিক নোট শ্রেডিং মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা:
  • বাজারে পরিচ্ছন্ন নোট সরবরাহের প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করা বা পূর্বের নির্দেশনা পরিবর্তন/পরিমার্জন করা।
  • প্রচলিত নোটের সৌন্দর্য্য ও গুণগত মানের উপর সে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়। Clean Note Policy প্রণয়ন এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন একটি দক্ষ নোট/মুদ্রা ব্যবস্থাপনা পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত নীতিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তফসিলি ব্যাংক, তাদের গ্রাহক এবং জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে Clean Note Policy সফল বাস্তবায়ন সম্ভব।

ব্যাংক নোট পরিবর্তন করার নিয়ম । ছেঁড়া টাকা বদলান খুব সহজেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *